Sunday 22 May 2011

প্রমিথিউসের পথের পথিক বিজন ষড়ঙ্গী



বিজন ষড়ঙ্গী
জন্ম- ১৭ আগস্ট ১৯৬৩
মৃত্যু- ২২ মে ২০০৭

জীবন উৎসর্গ করে
সবহারা জনতার তরে, মরণ যদি হয়--
ওরে তাহার ভারে হার মানে ওই পাহাড় হিমালয় রে
সব মরণ নয় সমান। - প্রতুল মুখোপাধ্যায়
বাবাই আমাকে শিখিয়েছেন, প্রকৃতিকে ভালোবাসতে, আর ধনী মানুষদের শোষণযন্ত্রে ক্রমাগত পিষ্ট হওয়া এই মাটির মানুষগুলির হয়ে ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করতে -- সংহতি ষড়ঙ্গী (বিজনের আদরের মাম্মা)
ছেলেটা বোকা ছিল না। ছিল ভীষণ আবেগপ্রবণ। যেটুকু বুঝি-- সেই দুরন্ত ছেলেটাও ঝাড়গ্রামের টাঁড় মাটিতে একাই পাথর সরাতে গিয়েছিল...। --অর্ক চৌধুরী
প্রগাঢ় যুক্তিবাদী বিজনের কাছে বিজ্ঞান ছিল চলার পথের একমাত্র সাহারা। সমাজের বহুদিক আছে। রয়েছে কুসংস্কার, লোকভয়, সামাজিকতার মিথ্যাচার এবং ভণ্ডামি। আমি খুব নির্ভয়ে বলতে পারি, বিজন এর বাইরে ছিল। উলঙ্গ সত্য আমাদের কাছে হাহাকার, তার কাছে পূজা। -- সুকোমল বসু
বিজনদা নেই। অথচ বিজনদা রয়েই গেলেন। আমাদের স্মৃতিতে---শ্রদ্ধায়। বিজনেরা থাকেন। রয়েই যান মানুষ ও পরিবেশ বাঁচানোর লড়াইতে, প্রতিবাদে। --সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়
আজ ২২ মে ২০১১। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট শিক্ষক, গণবিজ্ঞানকর্মী, পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা টপ কোয়ার্ক-এর প্রাণপুরুষ বিজন ষড়ঙ্গীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৭ সালের ২২ মে, ঝাড়গ্রামের  রঘুনাথপুরের কোয়ার্ক সায়েন্স সেন্টার-এর সম্পাদক বিজন মাত্র ৪৩ বছর বয়সে প্রয়াত হন। ঝাড়গ্রামের কলাবনী জঙ্গলে ওঁর মৃতদেহ পুলিশ উদ্ধার করে। খবরে প্রকাশ, বিজন গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, যদিও বিজনের ঝুলন্ত মৃতদেহর কোনও প্রত্যক্ষদর্শী নেই । যিনি প্রথম ওঁর দেহটি সনাক্ত করেন তাঁর নাম কাজল সিন্‌হা। উনিও বিজনকে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন নি। কিছু পুলিশ বেষ্টিত অবস্থায় মাটিতে বিজনের মরদেহ শায়িত ছিল। গাছের নীচে (মতান্তরে ঘটনাস্থল থেকে ১ কিলোমিটার দূরে) পাওয়া যায় ওঁর মোটরবাইক আর বাজারভর্তি ব্যাগ। পকেটে ছিল পিন দিয়ে আটকানো একটি সুইসাইড নোট। কেউ বলেন, মানসিক অবসাদজনিত কারণে আত্মহত্যা, আবার এখনও বহু মানুষের প্রশ্ন ওকে মেরে ফেলা হয়নি তো? কেউ আবার অনেক সন্দেহ-সংশয় ও নিরুত্তর জিজ্ঞাসার দোলাচলে রয়েছেন। বিজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু আজও গভীর রহস্যাবৃত।
আজ বিজনের চতুর্থ প্রয়াণ বার্ষিকীতে দীর্ঘদিনের গণবিজ্ঞানকর্মীবন্ধু চাকদহ বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থার বিবর্তন ভট্টাচার্য দূরভাষে আমাকে আকুলকন্ঠে প্রশ্ন করেন, রাজনৈতিক  পালাবদলের পর নতুন পরিবর্তিত বাংলার স্বচ্ছ, সৎ, সুশাসনে বিজন ষড়ঙ্গীর মৃত্যু রহস্যের কিনারা হবে তো? ঝাড়গ্রামের সবুজ শাল বনাঞ্চল ধ্বংস করাকে রুখতে গিয়ে যে শালগাছ মাফিয়াদের সাথে বিজনের বিরোধ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছিল, সেই গাছ-মাফিয়াদের হাত থেকে বিপন্ন বিপর্যস্ত প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষা পাবে তো? তাদের শাস্তি হবে তো? যে স্পঞ্জ আয়রন কারখানার দূষণের বিরুদ্ধে বিজনের আপোসহীন নির্ভীক সংগ্রাম ছিল, আজ তা ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এই দূষণ কবে বন্ধ হবে? এই কথাগুলো সব শুভবুদ্ধিসম্পন্ন, গণতন্ত্রপ্রিয়, পরিবেশ ও সমাজসচেতন মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিবর্তনদা আমাকে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করেছেন।
বিজনের মৃত্যুর পর বিজ্ঞান অন্বেষক পত্রিকার প্রকাশক কাঁচরাপাড়ার বিজ্ঞান দরবারের পক্ষ থেকে জয়দেব দে এক শোকবার্তায় বলেন--শ্রী ষড়ঙ্গীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সঠিক কারণ আমরা জানতে চাই। তাঁর মৃত্যুর জন্য যদি কেউ দায়ী হন তবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য। (স্মৃতিতে বিজন, সম্পাদনা- সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, পৃষ্ঠা-৪৯ প্রকাশকাল- ৩ আগস্ট ২০০৮) ৪ নভেম্বর, ২০০৭-এ ঝাড়গ্রামের দেবেন্দ্রমোহন হলে বিজন ষড়ঙ্গীর স্মরণ সভায় তাঁর মৃত্যুর সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার বলে দাবি করেন ভারতের মানবতাবাদী সমিতির চিররঞ্জন পাল। (কালান্তর, প্রকৃতি ও মানুষ, ১৯ নভেম্বর, ২০০৭)
বিশিষ্ট চিকিৎসক ও বিজ্ঞান লেখক জয়ন্ত দাস লিখেছিলেন--বিজনের মৃত্যু নিয়ে প্রশাসনিক তদন্ত রীতিমাফিক চলবে এবং একটি আত্মহত্যা বলে ফাইলটি বন্ধও হয়ে যাবে। আমরা যারা প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও দক্ষতা সম্পর্কে ততটা নিঃসন্দেহ নই, তারা কি একবার চেষ্টা করব না যাতে তদন্ত করার একটা চেষ্টা অন্তত হয়। আর যদি সত্যিই আত্মহত্যাই হয় এটি, তাহলে কীভাবে এমন একটি প্রবল আশাবাদী মানুষ লড়তে লড়তেই নৈরাশ্যের অন্ধকূপে একা একা ঝাঁপ দিয়ে পড়ে, তার ইতিবৃত্তও কি আমরা জানব না কোনওদিন? বিজনের মুখ তো কমবেশি আমাদেরই মুখ। (স্মৃতিতে বিজন, সম্পাদনা- সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, পৃষ্ঠা-১৭ প্রকাশকাল- ৩ আগস্ট ২০০৮)
এই জ্বলন্ত প্রশ্নগুলো ও তদন্তের দাবি শুধু বিবর্তনদা, জয়দেবদা, চিররঞ্জন বা জয়ন্তদার নয়, এই প্রশ্ন আমাদের সকলের। পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনে বিজনের অসমাপ্ত লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এই প্রশ্নগুলোর জবাব পেতেই হবে। দুনিয়া জুড়ে বিশ্বায়িত পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের ভয়ংকর আগ্রাসনে প্রাকৃতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দূষণের বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ সার্বিক গণপ্রতিরোধ গড়ে মায়ের আঁচলের মতো সুন্দর পৃথিবী গড়ার স্বপ্নকে সার্থক করতে, সবরকম দলীয় আত্মাভিমান ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতার ঊর্ধে উঠে এই প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজে নিতেই হবে। বৃহত্তর গণবিজ্ঞান, মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সংগ্রামী ঐক্য ও সুদৃঢ় সংহতিকে সুরক্ষিত করার স্বার্থেই উত্তর খুঁজতে হবে।
চারু মজুমদার, সরোজ দত্ত থেকে তাপসী মালিক, রাজকুমার ভুল...রিজওয়ানুর রহমান থেকে বিজন ষড়ঙ্গী-- অস্বাভাবিক মৃত্যুমিছিলের রহস্যময়অমীমাংসিত প্রশ্নগুলো অনন্তকাল ধরে কি আমাদের বিবেককে দংশন করে যাবে?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবেশ দপ্তরের তৎকালীন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় গভীর উদ্বেগের সাথে লেখেন--বিজনের মৃত্যু আমাদের অপরাধী করে দেয়। আর ভয় হয় যারা পরিবেশের জন্য এখনও লড়ছে তারা কি সবাই বিজনের পথ বেছে নেবে। বিজনের মৃত্যুতে জয়ী হয়ে যায় সবুজ ধ্বংসের মানুষজন। কিন্তু ওদের কিছুতেই জয়ী হতে দেওয়া যায় না। যারা বিজনের মৃত্যুর জন্য দায়ী তারা যদি পৃথিবীর বুকে জয়ী হয় তা হলে সভ্যতার সর্বনাশ। বিজনের চোখের মধ্য দিয়ে আমরা সর্বনাশের বার্তা বহন করতে চাই না। বিজনের আন্দোলনের চোখ হাজার চোখে জ্বলে উঠুক মোমের আলোর মতো। একটি মোমের আলো দিয়ে আর একটি মোম জ্বালালে যেমন মোমের কোনো ক্ষতি হয় না, তেমনই বিজনের মৃত্যু উস্কে দিয়ে গেল মানুষের ভেতরে জমে থাকা পরিবেশ ভাবনা। (স্মৃতিতে বিজন, সম্পাদনা- সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, পৃষ্ঠা-২১ প্রকাশকাল- ৩ আগস্ট ২০০৮)
বিজন ষড়ঙ্গী কোনো ব্যক্তিমানুষের নাম নয়। বিজন সমাজের অন্যায়-অবিচার-অত্যাচার-শোষণ-বঞ্চনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি আপোসহীন বিদ্রোহের নাম। বিজন মানে একটি দুর্বার প্রতিবাদ, একটি দুর্মর প্রতিরোধ। ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ভাববাদ, কুসংস্কার, অবিজ্ঞান-অপবিজ্ঞান, প্রাকৃতিক ও সমাজ-সাংস্কৃতিক পরিবেশদূষণ-এর বিরুদ্ধে এক অবিচল আদর্শনিষ্ঠ প্রত্যয়ী সংগ্রামের নাম। এক প্রখর যুক্তিবাদী ও বৈজ্ঞানিক অন্বেষা, এক অনির্বাণ দীপশিখার নাম। মানবিক চেতনা ও সমাজ পরিবর্তনের একটি শাশ্বত স্বপ্ন আর সেই স্বপ্নসন্ধানে ক্লান্তিহীনভাবে নিরন্তর পথচলা প্রমিথিউসের পথের পথিকের নাম। অসত্য থেকে সত্যে, অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে জ্ঞানের আলোকে, মৃত্যু থেকে অমরত্বে উত্তরণের এক দিশার নাম --বিজন ষড়ঙ্গী।
তাইতো বিজনদের মৃত্যু নেই, ক্ষয় নেই, ধ্বংস নেই। বিজনেরা অপরাজেয়, অপ্রতিরোধ্য। যতদিন শ্যামল বনানীর গাছপালা সমুন্নত শাখাপ্রশাখা আর সমাজ পরিবর্তনকামী মেহনতী সংগ্রামী মানুষেরা উদ্ধত মুষ্টিবদ্ধ হাত মেলে দেবে উদার-উন্মুক্ত সুনীল আকাশের দিকে, ততদিনই অগণিত বিজনেরা থাকবেন ওঁদের অদম্য জেদ ও দুর্নিবার লড়াইয়ের ইস্পাতকঠিন নিশিত সংকল্প নিয়ে।
আজ শোকমগ্ন এই বিষণ্ণ দিনে বিনম্র শ্রদ্ধায় ও নিবিড় মৌনতায় আমরা স্মরণ করি আমাদের সংগ্রামের সাথী, আমাদের প্রেরণা বিজনদাকে। তাঁর অমর স্মৃতির প্রতি প্রণাম জানাই। আন্তরিক সমবেদনা জানাই বিজনদার জীবনসাথী শুভ্রা বৌদি, ওঁদের একমাত্র কিশোরী কন্যা সংহতি আর শোকসন্তপ্ত স্বজন-পরিজনের সবাইকে।
আর এই আলোর পথযাত্রীর উদ্দেশে সকৃতজ্ঞ চিত্তে বলি,সুচেতনা, এই পথে আলো জ্বেলে, এ পথেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে...।
প্রতিবেদক- রাজেশ দত্ত, চন্দননগর, ২২ মে ২০১১
ইমেল- rajeshdattain@yahoo.com ও rajeshdattain@gmail.com
কিছু শ্রদ্ধার্ঘ্য
ছোট থেকেই বিজন জেদী এবং অভিমানী। কোথাও হেরে যাওয়া যেন তার অভিধানে ছিল না। --বিকাশ ষড়ঙ্গী (বিজনের মেজ ভাই )
বিজন আর কোনওদিন ফিরবে না, কিন্তু সময়ের ডাকে আরও অনেক বিজন জন্ম নেবে -- নন্দীগ্রামে বা সিঙ্গুরে। আমরা সেই অষ্টমগর্ভের সন্তানের অপেক্ষায়...।-- কল্যাণ রুদ্র (অধ্যাপক ও নদীবিশেষজ্ঞ)
ভারতবর্ষের শ্রম ইতিহাসে এ (চেঁচুড়গেড়িয়ার পাথরখাদানে সিলিকোসিস রোগগ্রস্ত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ এনে দেওয়া) এক অসাধারণ কীর্তি। বুঝে বা না বুঝে আমরা যারা শ্রমিকের স্বার্থ নিয়ে কিঞ্চিৎ হলেও ভাবতে চেয়েছি, তাদের কাছে এ এক সূর্যোদয়। এই জায়গা থেকেই বিজনের ঢুকে পড়া পরিবেশ আন্দোলনের বৃহত্তর বৃত্তে, বিশিষ্ট জন হিসেবে।--মানসপ্রতিম দাস (বিজ্ঞান সাংবাদিক ও লেখক)
আমরা মধ্যপন্থী। শ্যামকে রেখে কুল রক্ষা করি। এই দ্বিচারিতাকে বিজন ঘৃণা করত, অবজ্ঞা করত। তার তেজী, উদ্যমী, নির্ভয় স্বভাব এগিয়ে চলার শিক্ষা দিয়েছিল। ---দীপক কুমার দাঁ (বিজ্ঞান লেখক ও পূর্ব ভারত বিজ্ঞান ক্লাব সমিতির সভাপতি)
নজরুল যুবাদের প্রতি এক ভাষণে বলেছিলেন, যে হাতে শোভা পায় খর তরবারি সেই তরুণের কাঁধে ভোট ভিক্ষাঝুলি তুলে দেয় এদেশের দেশনায়কেরা দেখায়ে চাকুরির লোভ। কোন লোভ বিজনকে বিচলিত করতে পারে সে বিশ্বাস জন্মাবার আগে আমাদের কণ্ঠ যেন চিররুদ্ধ হয়ে যায়। --মাধব বন্দ্যোপাধ্যায় (প্রাবন্ধিক ও এন এ পি এম-এর সঙ্গে যুক্ত গণআন্দোলনকর্মী)
 “ঝাড়গ্রামের মতো মফঃস্বল শহরে বসে নিয়মিত পত্রিকা প্রকাশ করা মোটেই সহজ কাজ নয়, বিশেষত যদি সে পত্রিকা প্রতিষ্ঠানবিরোধী হয়। তবু বিজন প্রায় একা হাতে লড়াই চালিয়ে টপ কোয়ার্ক পত্রিকাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল এক সম্মানজনক অবস্থায়। -- উৎপল মুখোপাধ্যায় (বিজ্ঞান লেখক)
নিজের সংগ্রামী কর্মকাণ্ডকে দৈনিক জীবনাচরণের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত করা মুষ্টিমেয় কজন মানুষের একজন পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেল চিরতরে। এ ক্ষতি কেবল ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতবর্ষের নয়। অপূরণীয় এ ক্ষতি সভ্যতার। --শমীক মুখোপাধ্যায় (সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, টপ কোয়ার্ক)
বড় অদ্ভুত দুটো গভীর চোখ ছিল বিজনের। যে চোখ ছবি থেকে আজও আমাকে কি যেন এক অমোঘ আকর্ষণে আকৃষ্ট করে। --শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় (সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, টপ কোয়ার্ক)
রক্তের সম্পর্কে বিজন আমার আত্মীয় ছিল না। কিন্তু আমরা দুটো পরিবার নিবিড় আত্মীয়তায় যুক্ত হয়েছিলাম। সেই কথা ভাবলে মনে হয় আমি এক মূল্যবান রত্নকে হারালাম।--নজলুর রহিম (সহ সম্পাদক, টপ কোয়ার্ক)
কৃতজ্ঞতা স্বীকার - টপ কোয়ার্ক, উৎস মানুষ, মন্থন সাময়িকী, আকিঞ্চন, একক মাত্রা ও সোনার বাংলা বিজ্ঞান সঞ্চার গবেষণা সমিতি প্রকাশিত স্মৃতিতে বিজন সংকলন গ্রন্থ
বিজন স্মরণে, সংবাদ দর্পণে



কোয়ার্ক সায়েন্স সেন্টারের মুখপত্র কোয়ার্ক প্রথম প্রকাশিত হয় ১ জানুয়ারী ২০০২ সালে। কোয়ার্ক নামে দ্বিমাসিক এই বিজ্ঞান পত্রিকাটির ষোলোটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়। ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারী-মার্চ থেকে কোয়ার্ক-এর নাম পরিবর্তিত হয়ে নতুন নামকরণ করা হয়-টপ কোয়ার্ক। একাদশ বর্ষের (ডিসেম্বর ২০০১- মার্চ ২০০২) সংখ্যা থেকে টপ কোয়ার্ক-এর প্রচ্ছদে দ্বিমাসিক বিজ্ঞান পত্রিকা-র পরিবর্তে গণবিজ্ঞান পত্রিকা কথাটি মুদ্রিত হতে থাকে। বিজন ষড়ঙ্গীর মৃত্যুর পর ৪ নভেম্বর, ২০০৭-এ ঝাড়গ্রামের দেবেন্দ্রমোহন হলে বিজন ষড়ঙ্গীর স্মরণ সভায় টপ কোয়ার্ক-এর শেষ সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকাটি বের করার জন্য প্রায় সব কাজটুকুই বিজন সম্পূর্ণ করে রেখে গেছিলেন। তীব্র মানসিক অবসাদ-এ আক্রান্ত একজন মানুষ কীভাবে পত্রিকা প্রকাশের স্বতস্ফুর্ত উদ্যোগ নিতে পারেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন বিজনের কিছু ঘনিষ্ট বন্ধু।
 
 বিজন ষড়ঙ্গী সম্পাদিত ‘টপ কোয়ার্ক পত্রিকার পঞ্চদশ বর্ষ সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর ২০০৫ সংখ্যার প্রচ্ছদ। বিষয়- পশ্চিমবঙ্গে সাম্রাজ্যবাদী অনুপ্রবেশ।


টপ কোয়ার্ক পত্রিকার প্রথম বর্ষ পঞ্চম সংখ্যার প্রচ্ছদ। বিজন ষড়ঙ্গীর প্রচ্ছদ নিবন্ধ- সবুজ অরণ্যে মৃত্যু মিছিল। বিষয়- চেঁচুড়গেড়িয়ার পাথরখাদানে সিলিকোসিস রোগগ্রস্ত শ্রমিকদের জীবনযন্ত্রণার ইতিকথা। প্রকাশকাল- অক্টোবর-নভেম্বর ১৯৯৫।

টপ কোয়ার্ক (তখন নাম ছিল কোয়ার্ক) পত্রিকার জুলাই-আগস্ট ১৯৯৩ সংখ্যার প্রচ্ছদ।
স্মৃতিতে বিজন
৩ আগস্ট ২০০৮, পূর্ব ভারত বিজ্ঞান ক্লাব সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত ২৯ তম বিজ্ঞান ক্লাব সম্মেলনে প্রকাশিত স্মৃতিতে বিজন সংকলন গ্রন্থের প্রচ্ছদ। সম্পাদনা- সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। প্রকাশক- সোনার বাংলা বিজ্ঞান সঞ্চার গবেষণা সমিতি, গড়িয়া, কলকাতা-৭০০০৮৪। প্রচ্ছদ- রাজেশ দত্ত পরিমার্জন- দেবযানী সরকার।
যোগাযোগ- সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় (৯৪৩৩৩ ৫৩৩৪৯) ইমেল হদিশ - sabya4@gmail.com
শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় (৯৪৩৩৯ ৩৬৪৬৭)

'স্মৃতিতে বিজন' সংকলন গ্রন্থ থেকে কিছু নির্বাচিত লেখা



 জয়দেব দে-র ইমেল হদিশ- ganabijnan@yahoo.co.in

স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী স্বাস্থ্যের বৃত্তে পত্রিকার ডিসেম্বর, ২০১১ সংখ্যায় প্রকাশিত ডসব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের লেখা স্মরণে বিজন ষড়ঙ্গী সৌজন্য : 'স্বাস্থ্যের বৃত্তে'



লেখাটির পিডিএফ সংস্করণ ডাউনলোড করতে নীচের লিংকে ক্লিক করুন

‘স্মরণে : বিজন ষড়ঙ্গী’ - ড: সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, ‘স্বাস্থ্যের বৃত্তে’, ডিসেম্বর ২০১১ সংখ্যা





1 comment: